গাজীপুর চৌরাস্তা কাঁচাবাজারে অগ্নিকাণ্ড: ছাই হয়ে গেল শতাধিক ব্যবসায়ীর জীবিকার স্বপ্ন
মোঃ উজ্জ্বল, গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি
ভোরের অগ্নিকাণ্ডে আতঙ্ক
ভোরের শহর তখনও পুরোপুরি ঘুম ভাঙেনি। কেউ দোকান খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, কেউবা মালামাল সাজাচ্ছিলেন। এমন সময় হঠাৎ করেই আগুনের লেলিহান শিখায় দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে গাজীপুর মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তা কাঁচাবাজার। মুহূর্তেই চারপাশ ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। আতঙ্কে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয় ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের মধ্যে।
প্রাণপণ চেষ্টা ফায়ার সার্ভিসের সকাল আনুমানিক ৬টা ৩০ মিনিটের দিকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ভোগড়া ফায়ার সার্ভিসের তিনটি এবং জয়দেবপুর থেকে আসা দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। দেড় থেকে দুই ঘণ্টার প্রাণপণ চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় তারা। তবে ততক্ষণে বাজারের অধিকাংশ দোকানই ছাই হয়ে যায়।
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্নের কান্না এলাকার প্রবীণ দোকানি আব্দুল করিম (৫৫) ভাঙা কণ্ঠে বলেন—”চোখের সামনে দোকানটা পুড়ে গেল। এই দোকানই ছিল আমার পরিবারের ভরসা। এখন আমরা কোথায় যাবো?” শুধু তিনিই নন, প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীর মুখে একই হাহাকার। পোশাক, ফল, সবজি, মসলা— নানা ধরনের প্রায় ৩০ থেকে ৪০টি দোকান সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বহু বছরের সঞ্চয়, জীবনের সমস্ত পরিশ্রম মুহূর্তেই ভস্মীভূত হয়েছে।
কারণ অজানা, ক্ষতি কোটি টাকার অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনও নিশ্চিত নয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ এখনো নির্ধারণ করা যায়নি। তবে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
আগুনের পর বাজারজুড়ে ছাই অগ্নিকাণ্ডের পর বাজারজুড়ে এখন কেবল ছাই, ভাঙা টিন আর পোড়া কাঠের স্তূপ। দোকানিদের চোখেমুখে হতাশা, পরিবারগুলোতে দিশেহারা অবস্থা। অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। “সব শেষ হয়ে গেল, এখন বেঁচে থাকাটাই বড় কষ্ট।”— এমন হৃদয়বিদারক শব্দে ভরে উঠেছে চারপাশ।
এভাবেই গাজীপুর চৌরাস্তার কাঁচাবাজারে আগুন কেড়ে নিল শতাধিক পরিবার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর জীবিকার শেষ ভরসা।